বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপ করার প্রশ্নই ওঠে না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুখপাত্র রবীশ কুমার বৃহস্পতিবার এই বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে রবীশ কুমার বলেন, পৃথিবীর যে কোনো দেশের নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে তা সম্পূর্ণভাবেই সেই দেশের ওপর নির্ভর করে। আমার মনে হয় না ভারত কোনো দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবে। বিশেষত তা যদি প্রতিবেশী দেশ হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সংসদের বাইরের বিরোধী দল বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল ভারত সফরে এসেছিল। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ভারতের বিভিন্ন ‘থিংক ট্যাঙ্ক’-এর সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন। কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতার সঙ্গেও তাঁদের কথা হয়। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। তাঁরা বলেন, ভারতের নিজের স্বার্থেই উচিত বাংলাদেশের নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হয় তা দেখা। ওই সফর এবং বিএনপির অভিপ্রায় সম্পর্কে ভারতের ইতিকর্তব্য কি— এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার এসব মন্তব্য করেন।
বিএনপির তিন নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর সম্প্রতি দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশে ‘প্রকৃত গণতান্ত্রিক আবহ প্রতিষ্ঠায়’ সাহায্য করার আরজি নিয়েই তাঁরা সেখানে যান।
সফরে হুমায়ুন কবীর ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘পেছনে না তাকিয়ে আমাদের সামনের দিকে তাকানো উচিত। গত শতকের ৮০ ও ৯০-এর দশকের রাজনীতি এখন বাতিল হয়ে গেছে।’ ৮০ ও ৯০-এর দশকের রাজনীতিটা আসলে কী, তা আরও স্পষ্ট করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর। বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে খারাপ সম্পর্ক ছিল, তা ‘ভুল ও বোকামিপূর্ণ’ নীতির ফসল। পত্রিকাটিকে হুমায়ুন কবীর এ-ও বলেছেন, ‘তারেক রহমান চান, আমরা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলি।’
উল্লেখ্য, ভারতবিরোধিতা বিএনপির রাজনীতির একটি বড় অনুষঙ্গ। দলটির উদ্ভব, বিকাশ, নির্বাচনী কর্মকাণ্ড, এমনকি নিত্যদিনের রাজনৈতিক বিবৃতিতে এ বিরোধিতার উদাহরণ স্পষ্ট। বিএনপি তার প্রধান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে ভারতের কাছে নতজানু বলে বরাবরই কোণঠাসা করতে চেয়েছে।